সালাতের ভিতরের সকল দোয়া
নামাজের ভিতরে দোয়া:-
জায়নামাজে দাঁড়িয়ে নামাজ শুরুর পূর্বেই ক্বিবলামুখী দাঁড়িয়ে এই দোয়া পড়তে হয়,
বাংলা উচ্চারন- ইন্নি ওয়াজ্জাহ তু ওয়াজ্ হিয়া লিল্লাজি, ফাত্বরস্ সামা-ওয়া-তি ওয়াল্ আরদ্বঅ হানি-ফাওঁ ওয়ামা-আনা মিনাল মুশরিকী-ন।
অর্থ-নিশ্চই আমি তারই দিকে মুখ করলাম, যিনি আসমান ও যমীন সৃষ্টি করেছেন এবং বাস্তবিকই আমি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত নই ।
এরপর নামাজের নিয়াত
নামাজের ইচ্ছা করাই হচ্ছে নামাজের নিয়াত করা। মুখে উচ্চারণ করা জরুরী নয়, তবে মুস্তাহাব।
সমস্ত নামাজেই ,নাওয়াইঃতু আন্ উছাল্লিয়া লিল্লাহি তায়া’লা
(২ রাকাত হলে) রাক্ ‘য়াতাই ছালাতিল
(৩ রাকাত হলে) ছালাছা রাক্ ‘য়াতাই ছালাতিল
(৪ রাকাত হলে) আর্ বায় রাক্ ‘য়াতাই ছালাতিল
(ওয়াক্তের নাম) ফাজ্ রি/ জ্জুহরি/আ’ছরি/মাগরিবি/ইশাই/জুমুয়া’তি
(কি নামাজ তার নাম) ফারদ্বুল্ল-হি/ওয়াজিবুল্ল-হি/সুন্নাতু রসূলিল্লাহি/নাফলি।
(সমস্ত নামাজেই) তায়া’লা মুতাওয়াজ্জিহান্ ইলা জিহাতিল্ কা’বাতিশ শারীফাতি আল্ল-হু আক্ বার।
বাংলায় নিয়াত করতে চাইলে বলতে হবে,
আমি আল্লা-হ্’র উদ্দেশ্যে ক্কেবলা মুখী হয়ে, ফজরের/জোহরের/আসরের/মাফরিবের/ঈশার/জুময়ার/বি’তরের/তারঅবি/তাহাজ্জুদের (অথবা যে নামাজ হয় তার নাম)
২ র’কাত/৩র’কাত/৪ র’কাত (যে কয় রাকাত নামাজ তার নাম)
ফরজ/ওয়াজিব/সুন্নাত/নফল নামাজ পড়ার নিয়াত করলাম, আল্ল-হু আকবার ।
[[ তাকবীরে তাহরীমা ]]
তাকবীরে তাহরীমা- আল্লাহু আক্ বার, অর্থ-আল্লাহ মহান । ‘আল্লা-হু আকবার’ বলে দু’হাতকাঁধ বরাবরউঠিয়ে তাকবীরে তাহরীমা শেষে বুকে বাঁধবে।
[সানাঃ] (হাত বাধার পর এই দোয়া পড়তে হয়)
আল্লা-হুম্মা বা-‘এদ বায়নী ওয়া বায়না খাত্বা-ইয়া-ইয়া,কামা বা-‘আদতা বায়নাল মাশরিক্বি ওয়ালমাগরিবি। আল্লা-হুম্মা নাকক্বিনী মিনাল খাত্বা-ইয়া, কামা ইউনাকক্বাছ ছাওবুল আব্ইয়াযু মিনাদ দানাসি।আল্লা-হুম্মাগ্সিল খাত্বা-ইয়া-ইয়াবিল মা-য়ি ওয়াছ ছালজি ওয়াল বারাদি’।
অথবা
উচ্চারণ :- সুবহা-না কাল্লা-হুম্মা ওয়া বিহাম্ দিকা ওয়াতাবারঅ কাস্ মুকা ওয়াতা’ আ-লা জাদ্দুকা ওয়া লা-ইলা-হা গাইরুক।
অর্থ- হে আল্লাহ ! আমি আপনার পবিত্রতা ঘোষণা করছি এবং আপনার মহিমা বর্ণনা করছি। আপনার নাম বরকতময়, আপনার মাহাত্ম্য সর্বোচ্চ এবং আপনি ভিন্ন কেহই ইবাদতের যোগ্য নয় ।
তাআ’উজঃ
উচ্চারণ- আউযুবিল্লা-হি মিনাশ শাইত্বা-নির রাজীম ।
অর্থ- বিতারিত শয়তান থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাচ্ছি ।
তাসমিয়াঃ বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম ।
অর্থ- পরম দাতা ও দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি ।
সূরায়ে ফাতিহা পাঠঃ
এরপর সূরা ফাতিহা পাঠ করতে হয়, সূরা ফাতিহা তিলাওয়াতের পর পবিত্র কোরআনের যে কোন জায়গা থেকে তিলাওয়াত করতে হয় ।
[[ রুকু ]]
‘আল্লা-হু আকবার’ বলে রুকূতে যাবে।
سُبْحَانَ رَبِّيَ الْعَظِيْمِ ‘সুবহা-না রবিবয়াল ‘আযীম’ (অর্থ - মহাপবিত্র আমার প্রতিপালকযিনি মহান) কমপক্ষে৩ বার পড়বে।
রুকূ থেকে উঠে সোজা ও সুস্থিরভাবে দাঁড়াবে। এবং ইমাম ও মুক্তাদী সকলে বলবে।
‘
সামি‘আল্লা-হু লিমান হামিদাহ’ (অর্থ - আল্লাহ তার কথা শোনেন, যে তার প্রশংসা করে)।
তাহমীদঃ (রুকু থেকে দাঁড়িয়ে পড়তে হয়)
رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ ‘উচ্চারণ- রাব্বানা লাকাল হামদ । অর্থ- হে আমার প্রভু, সমস্ত প্রশংসা আপনারই ।
অথবা পড়বে
رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ حَمْدًا كَثِيْرًا طَيِّبًا مُّبَارَكًا فِيْهِ ‘রববানা ওয়া লাকাল হাম্দু হাম্দান কাছীরানত্বাইয়েবাম মুবা-রাকান ফীহি’ (অর্থ - হে আমাদের প্রতিপালক! আপনার জন্য অগণিতপ্রশংসা, যা পবিত্র ও বরকতময়)।
[[
সিজদা ]]
সিজদার তাসবীহঃ
سُبْحَانَ رَبِّيَ الْأَعْلَى ‘উচ্চারণ- সুবহা-না রাব্বিয়াল আ’লা।(অর্থ - মহাপবিত্র আমার প্রতিপালক যিনিসর্বোচ্চ)।কমপক্ষে তিনবার পড়বে। রুকূ ও সিজদার অন্য দোয়াও রয়েছে।
দুই সিজদার মধ্যবর্তী বৈঠকের দোয়া :
اَللَّهُمَّ اغْفِرْ لِيْ وَارْحَمْنِيْ وَاجْبُرْنِيْ وَاهْدِنِيْ وَعَافِنِيْ وَارْزُقْنِيْ-
আল্লা-হুম্মাগ্ফিরলী ওয়ারহামনী ওয়াজবুরনী ওয়াহ্দিনী ওয়া ‘আ-ফেনী ওয়ার্ঝুক্বনী । (অর্থ-হে আল্লাহ!আপনি আমাকে ক্ষমা করুন, আমার উপরে রহম করুন, আমার অবস্থারসংশোধন করুন, আমাকে সৎপথপ্রদর্শন করুন, আমাকে সুস্থতা দান করুন ও আমাকে রূযীদান করুন’।)
[হানীফি মাযহাবে এই দোয়া পড়া হয় না, কেউ যদি হানীফি মাযহাব এর হয়ে থাকেন তাহলে এই সময এক তসবী পড়তে যে সময় লাগে , সেই সময় পর্যন্ত বিরতি দিয়ে পুনঃরায় সেজদায় যাওয়া।]
বৈঠকের দোয়া সমূহ :
তাশাহ্হুদ (আত্তাহিইয়া-তু): আত্তাহিইয়া-তু লিল্লা-হি ওয়াছ্ ছালাওয়া-তু ওয়াত্ত্বাইয়িবা-তু আসসালা-মু‘আলায়কা আইয়ুহান নাবিইয়ু ওয়া রহমাতুল্লা-হি ওয়া বারাকা-তুহু। আসসালা-মু ‘আলায়না ওয়া ‘আলা‘ইবা-দিল্লা-হিছ ছা-লেহীন। আশহাদু আল লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়া আশহাদু আনণা মুহাম্মাদান ‘আব্দুহূওয়া রাসূলুহু ।
অর্থঃ আমাদের সব সালাম শ্রদ্ধা, আমাদের সব নামাজ এবং সকল প্রকার পবিত্রতা একমাত্র আল্লাহর উদ্দেশ্যে। হে নবী, আপনার প্রতি সালাম, আপনার উপর আল্লাহর রহমত এবং অনুগ্রহ বর্ষিত হউক । আমাদের ও আল্লাহর নেক বান্দাদের উপর আল্লাহর রহমত এবং অনুগ্রহ বর্ষিত হউক। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া আর কেউ নেই, আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, হযরত মুহাম্মদ (সঃ) আল্লাহর বান্দা এবং রাসুল ।
দরূদ :
আল্লা-হুম্মা ছাল্লি আ'লা মুহাম্মাদিওঁ ওয়া আ'লা আ-লি মুহাম্মাদিন কামা ছাল্লাইতাআ'লা ইব্রহীমাওয়া আ'লা আ-লি ইব্রহীমা ইন্নাকা হামীদুম মাজী-দ্ ।আল্লাহুম্মা বারিক্ আ'লামুহাম্মাদিওঁ ওয়া আ'লা আ'লিমুহাম্মাদিন, কামা বা-রাকতা আ'লা ইব্রহীমা ওয়া আ'লা আ'লিইব্রহীমা ইন্নাকা হামিদুম মাজীদ ।
অর্থ- হে আল্লাহ, দয়া ও রহমত করুন হযরত মুহাম্মাদ (সঃ) এর প্রতি এবং তার বংশধরদের প্রতি, যেমন রহমত করেছেন হযরত ইব্রাহীম (আঃ) ও তার বংশধরদের উপর। নিশ্চই আপনি উত্তম গুনের আধার এবং মহান। হে আল্লাহ, বরকত নাযিল করুন হযরত মুহাম্মাদ (সঃ) এর প্রতি এবং তার বংশধরদের প্রতি, যেমন করেছেন হযরত ইব্রাহীম (আঃ) ও তার বংশধরদের উপর। নিশ্চই আপনি প্রশংসার যোগ্য ও সম্মানের অধিকারী ।
দো’আয়ে মাছূরাহ
: আল্লা-হুম্মা ইন্নী যালামতু নাফ্সী যুলমান কাছীরাঁও অলাইয়াগ্ফিরুয যুনূবা ইল্লা আন্তা,ফাগ্ফিরলী মাগফিরাতাম মিন ‘ইনদিকা ওয়ারহাম্নী ইন্নাকাআন্তাল গাফূরুর রহীম’ ।
অর্থ- হে মহান আল্লাহ, আমি আমার নিজের উপর অনেক জুলুম করেছি (অর্থাৎ অনেক গুনাহ/পাপ করেছি) কিন্তু আপনি ব্যতীত অন্য কেহ গুনাহ মাফ করতে পারে না। অতএব হে আল্লাহ অনুগ্রহ পূর্বক আমার গুনাহ মাফ করে দিন এবং আমার প্রতি সদয় হোন; নিশ্চই আপনি অতি ক্ষমাশীল ও দয়ালু ।
এর পর অন্যান্য দোয়া সমূহ পড়তে পারে।
[[ সালাম ]]
দোআয়ে মাছূরাহ শেষে প্রথমে ডাইনে ও পরে বামে ‘আসসালামু আলায়কুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ’ (অর্থ -আল্লাহর পক্ষ হ’তে আপনার উপর শান্তি ও অনুগ্রহ বর্ষিত হৌক!) বলেসালাম ফিরাবে।
প্রথম সালামের শেষে ‘ওয়া বারাকা-তুহু’ (এবং তাঁর বরকত সমূহ) যোগ করা যেতে পারে।
সালাম ফিরানোর পরে নিম্নের দোয়া সহ অন্যান্য দোয়া পাঠ করা যেতে পারে-
اَللَّهُمَّ أَنْتَ السَّلاَمُ، وَمِنْكَ السَّلاَمُ، تَبَارَكْتَ يَا ذَا الْجَلاَلِ وَالْإِكْرَامِ-
আল্লা-হুম্মা আন্তাস সালা-মু ওয়া মিন্কাস্ সালা-মু, তাবা-রক্তা ইয়া যাল জালা-লি ওয়ালইকরা-ম । (অর্থ - ‘হে আল্লাহ আপনিই শান্তি, আপনার থেকেই আসে শান্তি। বরকতময়আপনি, হে মর্যাদা ও সম্মানেরমালিক।)
No comments